Tuesday, July 31, 2012

প্রথম ৩১ (The first 31st)

প্রথম ৩১? মানে? সেটা আবার কেমন কথা?
আরে মশাই.. আমার চাকরি জীবনের প্রথম ৩১ তারিখ, বুঝলেন? এ কি কম কথা?
আজ্ঞে হ্যাঁ... আজ আমি প্রথম বার নিজে খেটে কিছু উপার্জন করলাম. কত করলাম সেটা এখন বলছি না... কিন্তু যেটা বলার সেটা হলো.. মাস-মাহিনা পাওয়া ছাড়াও দিনটা বিভিন্ন কারণে স্মরনীয় হয়ে থাকবে. সকাল থেকে কি কি হলো সেটা তাহলে ডায়রীর আকারে লেখা যাক...

সকাল ৪.৪৫ 
এলার্ম দিয়েছিলাম ৫টায়. ২ টি উদ্যেশ্যে... প্রথমত তাড়াতাড়ি ইমেল দেখা, এবং একটু পড়াশুনো করা. উত্তেজনাতেই মনে হয়... ১৫ মিনিটে আগেই ঘুমটা ভেঙ্গে গেল. ইমেল খুলতেই পেয়ে গেলাম প্রথম pay slip. সব কিছু detail এ লেখা. ভালো কথা. তাহলে পড়তে বসা যাক. এখন Oracle SQL চলছে. পরলাম বেশ খানিক... পৌনে সাতটা  অবদি. স্নান-breakfast সেরে office. 

সকাল ৯ টা
সবাই উত্তেজিত... প্রথম salary . কেউ খুশি, কেউ অখুশি.. এই নিয়েই সারাক্ষণ আলোচনা. Training এর মাঝে ফাতেমা বলেই বসলো "What are you all talking about? I know it is your fist salary and you are very excited..." জনৈক colleague জানালো "ma'am we are not satisfied with our salary". বাহ... খাটি কথা. কিন্তু ফাতেমা ততক্ষনাত সাফ জানিয়ে দিল "Dont worry, that satisfaction is never gonna come".

দুপুর ১ টা
Vishnu tower ছেড়ে একটা slot এর জন্য Godrej Waterside এর দিকে যাওয়ার পালা. Vishnu tower এ আজ lunch এর ব্যবস্থা হয়নি. রাস্তায় লুচি খেলাম. Godrej Waterside এ process understanding এর slot. Unofficially বলছি... ঘুমে মারা যাচ্ছিলাম! slot শেষ হব হব এমন সময় ma'am এর ফোনে এ একটা call এসে জানালো গোটা কলকাতায় power down . Generator এ চলছে. তাড়াতাড়ি শেষ করতে. 

বিকেল ৪ টে
ওখান থেকে বেরিয়ে হওয়ায় একটা কথা শোনা গেল... গত দেশেই নাকি তাই অবস্থা. বিশ্বাস হলো না. যাই হোক... হাঁটা  দিলাম vishnu tower এর দিকে. সামনে এসে দেখি সবাই বাইরে. কার্রেন্ট নেই. তাই.. দুপুরে ভালো করে খাওয়া হয়নি. সামনে ফুচকার দোকান দেখে আর লোভ সামলানো গেল না. ফুচকা-ওয়ালা যখন আলু ছাড়াচ্ছে তখন বাবাকে ফোনে করে শুনি ঘটনা সত্যি... North আর East এর Grid বসে গেছে. দেশের বহু জায়গায় current নেই!! সব্বনাশ করেছে! যদিও এই সুবাদে শেষ স্লটটা আর হলো না. কিন্তু রাস্তায় এসে আর বাস পাই না. যে কটা বাস আসছে তুমুল ভিড়. প্রায় আধঘন্টা দাড়ানোর পর একটা AH -103 মোটামুটি ওঠার মতো পাওয়া গেল.

সন্ধ্যা ৬.৩০ 
airport এ এসে বাস থেকে নেমে আমি হা.. গিজগিজ করছে লোক. বাস কম. যে কটা আছে... ফেভিকল এর বিজ্ঞাপন এর মত লোক দরজায় ঝুলছে, ছাতে উঠে পরেছে, পিছনে ঝুলছে... এদিক-ওদিক লোক জন দৌরদৌরী করছে... ভয়াবহ পরিস্থিতি বলতে যা বোঝায় ঠিক তাই. কিচ্ছু না ভেবে আমি সোজা বিরটি মোরের দিকে হাঁটা দিলাম... শুধু আমিই নই... বহু মানুষ.. যেন মিছিল চলছে. রাস্তায় দেখা হয়ে গেল রানা কাকুর সাথে.. আরও একজন ছিলেন. 2 number এ এসে চা-চপ খেয়ে অটোর লাইনএ দাঁড়ালাম.. খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে বোঝা গেল এই দীর্ঘ লাইন শেষ করে অটোতে উঠতে আমাদের রাত পেরিয়ে যেতে পারে. সেখান থেকে আবার হাঁটা.. Delhi road হয়ে ভারতী-মিলন মাঠের পাশ দিয়ে শেষ পর্যন্ত রাত ৮ টায় মিষ্টির হাঁড়ি হাতে বাড়ি.


No comments: